"শিবসমুদ্রম" এই নামটার সাথে পরিচয় অনেক ছোট থেকেই - ভূগোল বইয়ের দৌলতে...কর্নাটক এর mandya জেলায় অবস্থিত এই ফলস বাঙ্গালোর থেকে মাত্র 140 কিমি দূরে। শুনেছিলাম বর্ষার জলে পরিপূর্ণতা পেলে এর রূপ হয় দেখার মতো,তাই সেই চান্স মিস না করে এমনই এক রবিবার এ আমরা বেরিয়ে পড়লাম ৮ বন্ধুর একটা চনমনে দল নিয়ে।
দিনটা যতদুর মনে পড়ছে ৯ই আগস্ট ২০০৯..আমরা রওনা দিলাম সক্কাল সক্কাল একটা টাটা সুমো করে..অনেকটা পিকনিক টাইপ এর ছিল আমাদের ট্রিপ টা..তাই বাড়ি থেকে ব্রেকফাস্ট আর লানচ বানিয়ে নিয়ে গেছিলাম আমরা সবাই মিলে। হই-হুল্লোড়,গান-বাজনা,গাল-গল্প করতে করতে আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের গন্ত্যবএ।তারপর ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়লাম সবাই মিলে।দূর থেকেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল একটা ধবধবে সাদা ফেনার মত উদ্দাম জলরাশি সদর্পে আছড়ে পড়ছে ৩২২ ফুট উঁচু পাহাড়ের ওপর থেকে।কাছাকাছি যেতেই তার তীব্র গর্জনে চারদিক গমগম করছিল।বেশ কিছুক্ষণ আমরা সবাই মিলে সেই নয়নাভিরাম দৃশ্য মন ভরে উপভোগ করলাম।কিন্তু shorterm memory র ভরসা কোথায়-তাই সেই সুন্দর মুহূর্ত গুলোকে longterm memory তে বন্দী করতে এরপর শুরু হলো আমাদের photo session ...:)
পাহাড়ের ওপর থেকেই দেখা যাচ্ছিল নিচে পাহাড়ী নদীতে ছোট ছোট গোলাকার নৌকোতে করে মাঝিরা যাত্রীদের নিয়ে ঘুরিয়ে আনছে।লোভ সামলাতে পারলাম না।আমারও সবাই নামতে শুরু করলাম পাহাড়ের গা দিয়ে দিয়ে,যদিও নামার জন্য সিড়ি মত করা ছিল,কিন্তু বর্ষার জলে তা বড়ই পিচ্ছিল হয়ে পরেছিল।অবেশেষে আমরা যখন নিচে এসে পৌছালাম তখন প্রত্যেকেই খুব উচ্ছসিত।ঝরনার জল জমে জমে একটা জায়গা বড় জলাশয় টাইপের আকার ধারন করেছে;সেটা দেখেই আমরা লাফালাফি আর জলকেলি শুরু করে দিলাম।ভরা বর্ষার টলটলে জলে গোল গোল নৌকা গুলো মাঝির নিপুন হাতের চালনায় হেলতে দুলতে বয়ে যাচ্ছিল দুরে-বেশ লাগছিল সেই দৃশ্য।কিছুক্ষণ পর আমাদেরও পালা এলো-একমন আশঙ্কা,উত্কন্ঠা আর ইচ্ছে নিয়ে চেপেই পরলাম ওইরকমই একটা নৌকোতে।গোল গোল হয়ে ঘুরতে ঘুরতে,জলের নাগরদোলায় দুলতে দুলতে বেশ লাগছিল তখন।কিছুক্ষণ পর আমরা আবার জল থেকে স্থলে ....:)
ঘড়ির কাঁটাও দ্রুত ঘুরছে আমাদেরই মত .....এবার lunch করে ফেরার পালা ....তবে সিঁড়ি ভেঙ্গে ওপরে উঠে আসার অভিজ্ঞতা টা বোধহয় আজও আমরা কেও ভুলিনি .....:)
খোলা আকাশের নিচে বসে রুটি,চিকেনকারি আর হালুয়া দিয়ে আমাদের পিকনিক lunch শেষ করলাম।অনাবিল আনন্দে কেটেছিল সেদিনের সেই প্রতিটা মুহূর্ত ...আজ ও মনে পড়লে মনের মধ্যে একটা "খুশি-তুফান" জেগে ওঠে !!!